Join us on Google+

header ads

মহাবিশ্বের অজানা রহস্য

মহাবিশ্বের অজানা রহস্য ১। ভূমিকা  পানির প্রতি টান মানুষের স্বভাবজাত। সৃষ্টির সেই শুরু থেকে বেঁচে থাকার পাশাপাশি মনের ক্ষুধা মেটাতেও পানির ওপরে নির্ভর করে আসছে মানুষ। আর সেটা যদি হয় সাগরের নীলচে লবণাক্ত পানি তবে তো কোনো কথাই নেই! পানের উপযোগী না হলেও মনকে সতেজ করে তুলতে যুগের পর যুগ সাহায্য করে এসেছে সাগর। অসাধারণ সব সৌন্দর্যের ভাণ্ডার সাজিয়ে রেখেছে নিজের গভীর বুকের মাঝে। শুধু সৌন্দর্যই নয়, সাগরের অতল গভীরতার ভেতরে লুকিয়ে আছে অনেক অনেক রহস্যও! এমন কিছু অমীমাংসিত রহস্য চুপটি করে লুকিয়ে আছে সাগরের মাঝে যেগুলোর কোনো ধরণের সমাধান আজ অব্দি পাওয়া যায়নি। আসুন জেনে নিই সাগরের এমনই কিছু অদ্ভূত রহস্যের কথা।  ২। ড্রাগন ট্রায়াঙ্গেল  পৃথিবীতে মোট ১২টি এমন স্থান রয়েছে বলে মনে করা হয় যেখানে এর চৌম্বকীয় আকর্ষণ প্রচণ্ড বেশি। আর এমনই এক স্থান হচ্ছে ডেভিলস সি বা শয়তানের সাগরের ভেতরে অবস্থিত ড্রাগন ট্রায়াঙ্গেল। জাপান আর বোনিন দ্বীপের মাঝখানে সাগরের মাঝে অবস্থিত এই স্থানটিকে জাপানীরা সবসময়ই ড্রাগনের আস্তানা বলে ভেবে এসেছে। জাপানিজ পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, এখানে এক ভয়ঙ্কর ড্রাগন বাস করে যার ক্ষুধা দূর করা একেবারেই সম্ভব না। আর তাই প্রায়ই সেটা নিজের কাছে আসা জাহাজ আর মানুষকে খেয়ে ফেলে নিজের ক্ষুধা মেটায়। সেই থেকে এর নাম হয়ে গিয়েছে ড্রাগন ট্রায়াঙ্গেল। ১২০০ শতাব্দীর দিকে কুবলাই খান বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেছেন জাপানকে দখলে নিতে। এগোতে চেয়েছেন শয়তানের সাগরের মাঝ দিয়ে। প্রতিবারেই ব্যাপক সংখ্যক মানুষ আর জাহাজ হারাতে হয়েছে তাকে। শুধু তিনিই নন, আজ অব্দি অগণিত জাহাজ আর উড়োজাহাজ স্রেফ হাওয়া হয়ে গিয়েছে এখানটায় এসে। বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের বিপরীতে অবস্থিত হলেও ঠিক ওটার মতনই রহস্য জমা হয়ে আছে ড্রাগন ট্রায়াঙ্গেলকে ঘিরেও। কারো কারো মতে মাঝে মাঝেই এক রহস্যময় নারীকে দেখতে পাওয়া যায় সাগরের ঐ বিশেষ জায়গাটিতে। ১৯৫০ সালে ড্রাগন ট্রায়াঙ্গেলকে অনিরাপদ বলে ঘোষণা দিলেও এরপর অনেকেই চেষ্টা করেছেন এখানকার রহস্য ভাঙতে। আর তাদের ভেতরে একজন ল্যারি কুছে নিজের বইয়ে জানান, ওখানে আর কিছুই না, রয়েছে এক বিশাল আগ্নেয়গিরি। আর যতসব রহস্যময় উধাও হওয়ার ঘটনা ঘটেছে আজ অব্দি সবগুলোর পেছনে হাত রয়েছে একমাত্র ঐ সমুদ্র আগ্নেয়গিরিরই! তবে আগ্নেয়গিরিই বা কীভাবে জাহাজ গ্রাস করে সে ব্যাখ্যাও কল্পনার বাইরে। আসল রহস্যটা থেকেই গেল।  ৩। বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল  ব্যাপারটা অনেকটা একই রকম। ঠিক গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেলের মতনই আরেকটা ট্রায়াঙ্গেল খুঁজে পাওয়া যায় সমূদ্রের ভেতরে। যেখানটায় একের পর এক ঘটে যেতে থাকে অদ্ভূত সব ঘটনা। হাওয়া হয়ে যেতে থাকে এক এক করে অনেক মানুষ, বিমান, জাহাজ- সবকিছু! কি এমন আছে ওখানে? কি ওটার রহস্য? আজও জানতে পারেনি কেউ। শয়তানের ট্রায়াঙ্গেল নামে পরিচিত রহস্যময় স্থানটিতে ভিনগ্রহবাসীদের হাত আছে বলে মনে করেন অনেকে। নির্দিষ্ট করে কোন স্থানটিতে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল আছে সেটা বলা যায় না। তবে আটলান্টিক মহাসাগরের ভেতরেই কোনো একটা জায়গায় আছে সেটা। অনেকের অনেক মত আছে একে নিয়ে। তবে অনুসন্ধানকারী লেখক কুছে জানান, কোনো একটা মাত্র কারণকেই বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের রহস্য বলে মনে করাটা বোকামি। এরচাইতেও বড় বোকামি হচ্ছে যতগুলো জাহাজ হারিয়েছে সেগুলোর সবগুলোকে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের শিকার বলে ধরে নেওয়া। হতেও তো পারে সেটা অন্য কোনো কারণে হারিয়ে গেছে বা ধ্বংস হয়েছে। তবে যে যাই বলুক, এখনো পর্যন্ত ব্যাপারটা ঠিক সেখানটাতেই আটকে আছে যেখান থেকে একদিন এটার শুরু হয়েছিল।  ৪। আর্কটিক সাগরের রহস্য  জাহাজ আর মানুষকে উধাও করে দেওয়ার ব্যাপারে এগিয়ে আছে যে তৃতীয় সাগরটি সেটা হচ্ছে আর্কটিক সাগর। প্রায়ই কোনো না কোনো কারণে হুট করে উধাও হয়ে যাচ্ছে এর ওপর দিয়ে ভাসতে থাকা জাহাজগুলো। তবে মাঝে মাঝে জাহাজগুলো বেঁচে গেলেও রক্ষা পাচ্ছেনা এর ভেতরের মানুষ। ১৮৭২ সালে সাগরের ওপর হঠাৎ মেরি ক্যালেস্টে জাহাজটিকে দেখতে পাওয়া যায়। সওদাগরী জাহাজটিতে প্রচুর খাবার আর ঠিক স্থানে ঠিক জিনিসপত্র বজায় থাকলেও কেবল ছিল না ভেতরের মানুষগুলো। সবকিছু ফেলে মাঝ সাগরে কোথায় গেল তারা? প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়নি আজও। সেই শুরু। এরপর এইচএমএস সাপ্পোহ, ইউএসএস সাইক্লোপস, এমভি জয়তা, ফ্লাইং ডাচম্যান, বেচিমো, ক্যারোল এ. ডেরিং, লেডি লোভিবন্ড ও অক্টাভিয়াসের মতন বিখ্যাত সব ভুতুড়ে জাহাজের জন্ম দিয়েছে সাগরটি। কখনো মানুষ উধাও, কখনো মানুষসহ জাহাজ। কখনো ছায়াময় ভুতুড়ে জাহাজের উৎপত্তি আবার কখনো পাগল কিছু মানুষকে উপহার দেওয়া- এভাবেই এখন পর্যন্ত নিজের রহস্যকে বজায় রেখেছে আর্কটিক। যেগুলোর উত্তর জানে না কেউ!  ৫। ম্যাকেঞ্জি ভূত  এডিনবরোর ব্ল্যাক মসোলিয়াম হল স্যার জর্জ ম্যাকেঞ্জির সমাধি। এখানে যে সব পর্যটকরা ঢোকেন, তাদের অনেকেরই গায়ে পড়ে অদ্ভুত আঁচড়। এই আঁচড়ের রহস্য ভেদ করা যায়নি।  ৬। আইয়ুদের অ্যালুমিনিয়াম গোঁজ  ১৯৭৪ সালে রোমানিয়ায় আবিষ্কৃত হয় ২৫ লক্ষ বছর আগের একটি গোঁজ। গোঁজটিতে অ্যালুমিনিয়ামের চিহ্ন পাওয়া যায়। কিন্তু সেসময় অ্যালুমিনিয়ামের ব্যবহার ছিল অজানা। সেসময় কোথায় থেকে এ গোঁজ আনা হয়েছে সেটি আজো উদঘাটন হয়নি।  ৭। এসএস ঔরাঙ্গমেডাং অন্তর্ধান রহস্য  ১৯৪৭ সালে মালয়েশিয়ার এই জাহাজ আকস্মিক ভাবেই সমুদ্রপথে হারিয়ে যায়। সেই জাহাজ কোথায় হারিয়ে গেল জানা যায় না আজও। এমনকি কখনো এ জাহাজের সন্ধান পাওয়া যাবে কিনা সেটিও বলতে পারছেন না বিজ্ঞানীরা।  ৮। নাজকা লিপি  প্রাচীন নাজকা সভ্যতার মানুষজন মাটির বিরাট অংশ জুড়ে এঁকে গেছেন মাকড়সা, হনুমান, হাঙর আর ফুলের ছবি। যেগুলোর প্রকৃত আকৃতি একমাত্র বিমান থেকে দেখলেই বোঝা যায়। সেসময় কীভাবে তারা এসব ছবি একেছিলেন সে রহস্য আজো উদঘাটন হয়নি।  ৯। ডিবি কুপার  একটি বোয়িং ৭২৭ বিমান হাইজ্যাক করার পর মাঝআকাশে দুই লাখ ডলার সমেত প্যারাশুট নিয়ে প্লেন থেকে ঝাঁপ দেন কুপার। তার পর কী হল, কোথায় গেলেন তিনি, সে রহস্য আজো অজানা। ১৯৭১ সালের ২৪ নভেম্বর পোর্টল্যান্ড এবং সিয়াটলের মধ্য আকাশে এ ঘটনা ঘটেছিল। উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের অভিযোগে আজও তাকে খুঁজছে মার্কিন গোয়েন্দারা।  ১০। ‘ওয়াও’ সঙ্কেত  ওহিও বিশ্ববিদ্যালয়ে আকাশ নিরীক্ষণ কেন্দ্রে কর্মরত জেরি এমান স্যাজিটেরিয়াস তারকাপুঞ্জ থেকে হঠাৎ এক অদ্ভুত বেতার বার্তা পেয়েছিলেন। সেই বার্তার অর্থ আজও অজানা। বিজ্ঞানীরাও এ বার্তার অর্থ উদঘাটন করতে পারেনি। ১১। ব্রিটিশ কলম্বিয়ার সমুদ্রসৈকতের কাটা পা  এই সমুদ্রসৈকতে প্রায়শই ভেসে আসে মানুষের পায়ের কাটা নিম্নাংশ। কাদের পা, কোথা থেকে আসে তা কেউ জানে না। এ নিয়ে অনেক গবেষণাও হয়েছে কিন্তু ফলাফল শূন্য। ফলে কাটা পায়ের নিম্নাংশের রহস্য আজো উদঘাটন হয়নি।  ১২। ভিনগ্রহের প্রাণী  পৃথিবী ছাড়া অন্য গ্রহে সত্যি কি প্রাণের অস্তিত্ব আছে? তারা কি আনাগোনা করে পৃথিবীতে? অনেকে অবশ্য দাবি করেন, পৃথিবীতেই দেখা পেয়েছেন সেসব ভিনগ্রহের প্রাণীর। কিন্তু বস্তুত আজো সেটি ধরাছোঁয়ার বাইরে। ফলে এ বিষয়ে রহস্য থেকেই যায়। ১৩। অ্যাটলান্টিসের হারানো শহর  প্লেটোর ‘টিম্যাউস’ এবং ‘ক্রিটিয়াস’ বইতে উল্লেখ রয়েছে অ্যাটলান্টিস বলে এক শহরের। সেই শহর আজ কোথায় গেল? তা কি সমুদ্রের তলায় হারিয়ে গেল সে বিষয়ে কিছুই জানা যায়নি। এ নিয়ে অনেক অনুসন্ধানও চালিয়েছেন গবেষকরা কিন্তু রহস্য উদঘাটন হয়নি আজো।  ১৪। স্টোনহেঞ্জ  ইংল্যান্ডের উইল্টশায়ারে দু’ মাইল এলাকা জুড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে প্রাগৈতিহাসিক যুগে প্রথিত একগুচ্ছ প্রস্তরখণ্ড। কে, কারা বা কেন এই পাথরগুলো সেখানে এনেছিল, কীভাবে এনেছিল, তা সবই রহস্য।  ১৫। বিগ ফুট  আমেরিকা ও কানাডার পাহাড়ি অঞ্চলে দেখা মেলে এক গোরিলা সদৃশ জীব। যাকে স্থানীয়রা বিগ ফুট নামে ডাকেন।  ১৬। রঙ্গোরঙ্গো  রহস্যমণ্ডিত ইস্টার দ্বীপপুঞ্জে কয়েকটি হায়রোগ্লিফিক লিপি খোদিত কাঠের টুকরো পাওয়া গেছে। সেই লিপির পাঠোদ্ধার আজও করতে পারেনি কেউ।  ১৭। জর্জিয়া গাইড স্টোন  ১৯৭৯ সালে আমেরিকার আলবার্ট কউন্টিতে স্থাপিত এই বিরাট প্রস্তরখণ্ডগুলোর গায়ে ইংরেজি, সিংহলি, হিন্দি, হিব্রু, আরবি, চাইনিজ, রাশিয়ান এবং স্প্যানিশ ভাষায় লেখা হয়েছে দশটি নিউ কমান্ডমেন্টস। কিন্তু সেগুলোর অর্থদ্ধার আজও সম্ভব হয়নি।  ১৮। তামাম শুদ  ১৯৪৮ সালের ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেডের সমুদ্রসৈকতে পাওয়া যায় এক ব্যক্তির মৃতদেহ। তার পকেটে ছিল এক টুকরো কাগজ। যাতে লেখা ছিল তামাম শুদ। যার অর্থ শেষ। কিন্তু কে ছিল সেই ব্যক্তি? আজও অজানা।  ১৯। জ্যাক দ্য রিপার  অষ্টাদশ শতকের ইংল্যান্ডে কোনও এক রহস্যময় আততায়ী ১১জন মহিলাকে খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে খুন করে। সেই আততায়ী যে আসলে কে ছিল, তা আজও অজানা।  ২০। ভয়নিখ পুঁথি  যে রহস্যময় ভাষায় এই পুঁথি রচিত তার মর্মদ্ধার আজ পর্যন্ত কেউ করতে পারেননি। শুধু অর্থ পাওয়া গেছে এই পুঁথির পাতায় পাতায় আঁকা ছবিগুলোর। ২১। মৎস কন্যা  ১৯৪৭ সালে ৮০ বছর বয়স্ক একজন জেলে নাকি উপকুল থেকে ২০ গজ দূরে এক মৎসকন্যা দেখেছিলেন যে নাকি গলদা চিংড়ির দাড়া দিয়ে চুল আচড়াচ্ছিলো, কিন্ত যখনই ওই মৎসকন্যা বুজতে পারল কেউ তাকে দেখছে ওমনি টুপ করে পানির মধ্যে তলিয়ে যায়। ১৮৫৭ সালের জুন ৪, ব্রিটিশ শিপিং গ্যাজেট এ লেখা আছে এক স্কটিশ নাবিক নাকি সাগরে মধ্যে ঢেউ এর উপর এক কিশোরী কে বসে থাকতে দেখেছে। ১৮৩৩, আইল অভ ইয়েল, ছয়জন জেলে নাকি এক মেয়ে কে তাদের জালে আটকায়, তিনফুট লম্বা ওই মেয়ে নাকি জেলেদের নৌকায় উঠার পর তিন ঘন্টা ছিল, সে নাকি জেলেদের সাথে কোন প্রতিরোধ এ যায়নি। শুধু আস্তে আস্তে ফোপাচ্ছিল। ওই মেয়ের নাকি কোন মাছের মত লেজ ছিল না। কিন্ত তার দেহে সামান্য আঁশ ছিল। জেলেরা মারাত্নক ভয় পেয়ে যায় নৌকা আর সাগরের মধ্যে তারা আর প্রতিবন্ধকাতা তৈরি করেনা ইশারায় মেয়েটিকে চলে যেতে বলে। কৃতজ্ঞতার দৃষ্টি হেনে মেয়েটি নিখুত এক ডাইভ দিয়ে সাগরে চলে যায়। সাগরে নেমে কিছুক্ষন পর আবার ঊঠে ঢেউ এর উপর ভেসে ভেসে তাদের কৃতজ্ঞতা জানায় এবং এক সময় সাগরে হারিয়ে যায়। এ গল্প এডিনবর্গ ইউনিভার্সিটির ন্যাচারাল হিষ্ট্রির প্রফেসর ম্যাক্লিহানকে শুনান এডমন্ডসন নামে এক জাহাজের কাপ্তান। ১৮১১, অক্টোবর ২৯ ক্যাম্পবেল টাউন, সাগর কুলে ছোট্ট এক স্কটিশ গ্রাম জন মেসিইক ছুটতে ছুটতে শেরিফ কে এসে বলেন এইমাত্র সে সমুদ্রতটে এক মৎসকন্য বসে থাকতে দেখেছে। শেরিফ তাকে নিয়ে যায় রেভারেন্ড জর্জ রবার্টসন, রেভারেন্ড নরম্যান ম্যাক্লদ, এবং রেভারেন্ড জেমস ম্যাক্সয়েল এর কাছে, জন মেসিইক হলফ করে বলে রেভারেন্ডদের কাছে যা সে শেরিফদের কাছে বলছে। বিজ্ঞ রেভারেন্ড মন্ডলী স্বীকার করে নেয় জন মেসিইক সত্যি বলছেন।  ২২। আটলানটিস শহরের আজানা কথা  হলিউড মুভিতে "সিটি অফ আটলান্টিস" এর কথা অসংখ্য বার এসেছে। পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন রহস্য এটি। সময়ের হিসাবে তা প্রায় ১১,৫০০ বছরের প্রাচীন। এতো প্রাচীন রহস্য তাও মানুষ এটি সমাধান করতে পারে নি, তাহলেই বুঝেন কেমন রহস্য এটি। এই রহস্য উদ্ধারের একটি সুএ আছে, যদি আপনারা কেও আটলান্টিস খুজতে আসলেই যান তারা খুব সহজেই আটলান্টিস পেয়ে যাবেন কারন এটি "in front of the Pillars of Hercules" অবস্থিত। এর আয়তন ছিল লিবিয়া আর এশিয়ার মিলিত আয়তনের সমান। এতো বিশাল একটা শহর মাএ একদিনেই ধ্বংশ হয়ে গেছে লেখকের ভাষায় "in a single day and night of misfortune"। কোন লেখকের কথা বলছি? জী তিনি বিখ্যাত এক্সপ্লোরার প্লোটো/প্লাটো।  ২৩। বগ বডিস  আচ্ছা বগ বডিস জিনিসটা কি আগে তা বলে নেই। মমি আর বগ বডিস কিন্তু এক না। মমি হলো সেই সব বডি যেগুলো বিভিন্ন ক্যামিকালের সাহায্য বিভিন্ন প্রক্রিয়ার প্রিজার্ভ করা হয় আর বগ বডি হলো প্রাকৃতিক ভবে যে সব বডি প্রিজার্ভ হয়ে থাকে। Damendorf Man, Dätgen Man, Husbäke Man, Jührdenerfeld Man ইত্যাদি নামের হাজারের উপর বগ বডিস ছিল কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় অনেক গুলো নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া মাটির নিচে যেখাবে প্রিজার্ভ ছিল আবিস্কারের পর সেভাবে আর প্রিজার্ভ করা হয় নাই। ফলে বর্তমানে মাএ ৪৫ টা বগ বডিস টিকে আছে।বগ বডিস মুলত জার্মানী, ব্রিটেন, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ড ও ডেনমার্কে পাওয়া যায়।  ২৪। বেদীর পাথর বা শ্লটার স্টোন বা বধ্যভূমির পাথর  এইটা ২৫০০-৩০০০ বছরের পুরান একটা রহস্য। কে বা কারা এটা কেন বানিয়েছে তা আজও অজানা। ধারনা করা হয় এই চক্রটা ব্যবহার করা হতো আহত সন্যদের আরোগ্য লাভের ট্যাম্পল হিসাবে। (বিভিন্ন গেমে কিন্তু এটা দেখা যায়) অনেকে বিশ্বাস করে এটা একটা বিমানবন্দর, অবশ্যই এলিয়েনদের যান নামানোর জন্য। তবে যে মতবাদটি সবচেয়ে বেশী গ্রহনযোগ্য তা হলো এটি একটি সেক্রিফাইস বেদী বা মন্দির মানে এখানে বলি দেওয়া হতো কিন্তু কারা এটা ব্যবহার করতো এই প্রশ্নটা আনসলভ থেকে যায়। যাই হোক, এবার আসি এর গঠনশৈলীতে, সমতল ভূমির প্রায় ৮ মাইল উত্তরে স্টোনহেঞ্জ অবস্থিত। এতে বৃত্তাকারে বড় বড় দণ্ডায়মান পাথর রয়েছে, সার্কেলের ভিতরে যে কয়টা ব্লুস্টোন আছে তার প্রতিটির ওজন নিখুতভাবে ৬ টন এবং এগুলোর চতুর্দিকে মৃত্তিকা নির্মিত বাঁধ রয়েছে। স্টোনহেঞ্জের গঠন খানিকটা জটিল। এর বাইরের দিকে একটি বৃত্তাকার পরিখা রয়েছে। প্রবেশপথটির কিছুটা দূরেই রয়েছে মাটির বাঁধ। এ বাঁধের ভেতর চতুর্দিকে বেষ্টন করে আছে ৫৬টি মৃত্তিকা গহ্বর। পাথরগুলোর মধ্যে আরও দুই সারি গর্ত বেস্টন করে আছে। পাথরগুলোর গঠনের মধ্যে আছে দুইটি বৃত্তাকার এবং দুইটি ঘোড়ার খুরের নলের আকারবিশিষ্ট পাথরের সারি। এ ছাড়াও কতগুলো পৃথক পাথর রয়েছে অলটার স্টোন বা পূজা বেদীর পাথর বা শ্লটার স্টোন বা বধ্যভূমির পাথর।  ২৫। কিং আর্থার  কিং আর্থার ছিল উথার পেনড্রাগনের ছেলে, যে গ্রেট ব্রিটেনের উপকথার একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। সেখানে সে যুদ্ধ জন্য এবং শান্তির জন্য একজন আদর্শ রাজার চরিত্র হিসেবে আবির্ভূত হয়। ইতিহাস অনুসারে তিনি ছিলেন একজন রোমান এবং মধ্যযুগের কিংবদন্তির ব্রিটিশ নেতা, যে ৬ষ্ঠ শতাব্দীর আগের স্যাক্সন আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে ব্রিটেনের প্রতিরহ্মার নেতা হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছিল। এইটি ব্রিটেনের বিষয়ের প্রধান চরিত্র (ব্রেটোন এবং আর্থারিয়ান চক্র), যদিও আর্থারের সম্বন্ধে মতানৈক্য আছে, ধারনা করা হয়, কিং আর্থার একটি আসল মানুষের জীবনীতে গড়ে ওঠা কাল্পনিক চরিএ, যিনি সত্যিই ছিলেন।" কিং আর্থার" মুভিটা কিন্তু আমরা অনেকেই দেখেছি। কিং আর্থার, তার মেজিশিয়ান,Merlin ও গোলটেবিলের নাইট- এই নিয়েই মিথ গড়ে উঠেছে। মিথ আরো বলে যে তার সোর্ডটা নাকি পাথরের ভিতর আটকানো ছিল। ৬ষ্ট শতাব্দীতে তিনি ইংল্যান্ড, আইয়ারল্যান্ড, আইসল্যান্ড, নরওয়ে ও গল রাজ্য জয় করেন। ইতিহাসবীদদের মতে, ২য় শতাব্দীর রোমান কমান্ডার Lucius Artorius Castus ই আসলে কিং আর্থার। টাইম মেশিন তৈরি না হলে এই রহস্যের সমাধান করা সম্ভব না মনে হচ্ছে।  ২৬। মস্কো মেট্রো-২  এটি রাশিয়ায় অবস্থিত। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আন্ডারগ্রউন্ড সিটি এইটি। কিন্তু এখন পর্যন্ত রাশিয়ার সরকারের তরফ থেকে কখনই এর অস্তিত্ব স্বীকার করে নেওয়া হয়নি। স্তালিনের আমলে এইটি তৈরি করা হয়েছিল। একটা বিশাল অংশের মানুষ মনে করে এটি ক্রেম্লিনের সাথে fsb headquarter এর সংযোগ স্থাপন করেছে। পুরো একটি শহর এটি অথচ মানুষ এই জায়গায় যাওয়া তো দূরে থাক, এখনো এই সম্পর্কে ভাল করে কিছু জানেই না।  ২৭। এরিয়া ৫১  যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদাই অবস্থিত এই জায়গাটি নিয়ে সারা বিশ্বের মানুষ এখনো একটা ঘোরের মধ্যে আছে। এটি একটি মিলিটারি বেইজ এবং পৃথিবীর সবচেয়ে সিকিউর এলাকাগুলোর একটা। এর এরিয়ার বাইরেও একটা বিশাল এলাকা জুড়ে সাধারণ মানুষের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কি করা হয় ওখানে ? পৃথিবীর একটা বিশাল অংশ মানুষের ধারনা ওখানে এলিয়েন নিয়ে গবেষণা করা হয়। অনেক মানুষ এলিয়েনদের সাথে যোগাযোগ করা গেছে বলেও বিশ্বাস করে।  ২৮। ১৯৬৯ সালে মানুষের চাঁদে পদার্পন  এটি বহু পুরানো একটি আলোচনা। সালটি ছিল ১৯৬৯ এটি ছিল পৃথিবীর জন্য একটি স্বপ্নের বছর। স্বপ্নকে সত্য করার বছর। এই দিন পৃথিবীর মানুষেরা প্রথম ছাদে তার পদধূলী রাখে। চাঁদ কে জয় করে অসম্ভবকে সম্ভব করে ফেলে মানুষ। তখন অনেকে এর বিরোধিতা করেন। তারা বলেন ১৯৬৯ সালে মানুষ চাঁদকে জয় করতে সক্ষম হয়নি। তারা কারন হিসাবে বলে তখনকার যেসকল প্রযুক্তি ছিল তা দিয়ে চাঁদে যাওয়া সম্পূর্ণভাবে অসম্ভব। তারা মনে করেন মার্কিনীরা তখন সম্পূর্ণ ঘটনাটি শুটিং করে মানুষদের সামনে তুলে ধরেন এবং তাদের এও ধারনা যে স্ট্যানলি কুবরিক ছিলেন এর পরিচালক।  ২৯। ২০০৪ সালের ভারত মহাসাগরের সুনামি  ২০০৪ সাল এটি ছিল এশিয়ার মানুষদের জন্য খুব বেদনাদায়ক একটি দিন। এশিয়ার সমুদ্ররের পাশ্ববর্তী দেশগুলোর মানুষেরা এদিন প্রকৃতির এক ভয়াবহ ও নিষ্ঠুর খেলার বাস্তব রূপ দেখতে পায়। বিশাল আকারের এই প্রকৃতিক দুর্যোগ সুনামী আছড়ে পড়ে সমুদ্র পার্শ্ববর্তী বেশ কয়েকটি দেশে। লাখ লাখ মানুষ মারা যায় এই নিষ্ঠুর সুনামীতে। বিশেষ করে ইন্দোনেশিয়া ও শ্রীলংকায় এই দুর্যোগে হতাহতের সংখ্যা ছিলো সবচেয়ে বেশী। বিশ্ববাসী কখনোই প্রকৃতির এই নিষ্ঠুর ও ভয়াবহ রূপ ভুলতে পারবে না। কিন্তু মিশরসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশের সংবাদপত্রের দাবী এর পিছনে বিশ্বের শক্তিশালী বেশ কয়েকটি দেশের হাত রয়েছে। গোপনীয় পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা চালাতে গিয়ে দূর্ঘটনাক্রমে বিস্ফোরণে এই সুনামীর সৃষ্টি হয় বলে ধারণা করেন অনেকে।  ৩০। অদ্ভুত রহস্যেঘের এক দ্বীপ বাল্ট্রা  প্রকৃতির বিচিত্র খেয়ালের অনেক রহস্যই এখনো উম্মোচিত করা সম্ভব হয়নি। এমনই অদ্ভুত রহস্যেঘের এক দ্বীপ বাল্ট্রা। বাল্ট্রা মূলত মানববসতিশূন্য একটি দ্বীপ। দণি আমেরিকার ইকুয়েডরের নিকটবর্তী ১৩ টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জ। আর এই ১৩টি দ্বীপের একটিই হচ্ছে বাল্ট্রা। কিন্তু এখানকার অন্য ১২টি দ্বীপ থেকে বাল্ট্রা একেবারেই আলাদা, অদ্ভুত এবং রহস্যময়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কৌশলগত কারণে এই দ্বীপপুঞ্জের কয়েকটি দ্বীপে এয়ারবেস স্থাপন করে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। তখনকার এয়ারবেসের একজন অফিসার ফ্রান্সিস ওয়াগনার এর মাধ্যমেই বিশ্ববাসী প্রথম জানতে পারে বাল্ট্রা দ্বীপের অদ্ভুত চরিত্রেক কথা। এরপর অনেকেই এই দ্বীপের রহস্যময় আচরণের কথা স্বীকার করেন। এটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় দ্বীপপুঞ্জ হওয়ায় এখানে প্রচুর বৃষ্টি হয়। কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার হলো বৃষ্টির এক ফোঁটাও পড়েনা বাল্ট্রাতে। কী এক রহস্যজনক কারণে বাল্ট্রার অনেক উপর দিয়ে উড়ে গিয়ে অন্য পাশে প্রড় বৃষ্টি। বাল্ট্রা অর্ধেক পার হওয়ার পর অদ্ভুতভাবে আর এক ইঞ্চিও এগোয়না বৃষ্টির ফোঁটা। বৃষ্টি যত প্রবলই হোক এ যেন সেখানকার এক অমোঘ নিয়ম। বাল্ট্রাতে এলেই অস্বাভাবিক আচরণ করে নাবিক বা অভিযাত্রীর কম্পাস। সব সময় উত্তর দিক নির্দেশকারী কম্পাস এখানে কোন সময় স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, আবার দিক-নির্দেশক কাঁটা ইচ্ছামতো ঘুরতে থাকে অথবা উল্টাপাল্টা দিক নির্দেশ করে। সবচেয়ে রহস্যজনক ব্যাপার হলো বাল্ট্রা দ্বীপের উপর প্লেনে থাকাকালীন সময়েও এমন অদ্ভুত আচরণ করে কম্পাস। আবার দ্বীপ পার হলেই সব ঠিক। বাল্ট্রার আরেকটি অদ্ভুত দিক হলো- এর “মানসিক” দিক। অন্য বারোটি দ্বীপের তুলনায় “মৃত দ্বীপ” বাল্ট্রায় পা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই যে কারো মাথা অনেক হালকা হয়ে যায়। অজানা অচেনা কোন এক জায়গায় হারিয়ে যাওয়ার আশ্চর্যরকম ভালো একটা অনুভূতি আচ্ছন্ন করে ফেলে মনকে। বেশিণ এ দ্বীপে থাকলে দ্বীপ থেকে চলে আসার পর কিছুদিন সেই আশ্চার্য অনুভূতি থেকে যায়। পরে অবশ্য আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যায়। অদ্ভুত দ্বীপ বাল্ট্রায় কোন বৃ নেই। নেই কোন পশুপাখি। কোন পশুপাখি এ দ্বীপে আসতে চায় না। দ্বীপের রহস্যময়তার আবিষ্কর্তা ওয়েগনার জোর করে কিছু প্রাণীকে বাল্ট্রা এবং এর পাশের দ্বীপ সান্তাক্রুজের মধ্যবর্তী খালে ছেড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু দেখা গেল বাল্ট্রাকে এড়িয়ে সান্তাক্রুজের ধার ঘেঁষে চলছে প্রাণীগুলো। শুধু তাই নয়, উড়ন্ত পাখিগুলোও উড়তে উড়তে বাল্ট্রার কাছে এসেই ফিরে যাচ্ছে। দেখে মনে হয়, যেন অদৃশ্য কোন দেয়ালে ধাক্কা খাচ্ছে ওরা।  ৩১। মারিয়ানা ট্রেঞ্চ  মারিয়ানা ট্রেঞ্চ নিয়ে মানুষের উৎসাহ বহু আগে থেকেই। প্রায় দেড় শ বছর আগে থেকে তোড়জোড় চলে আসছে এটির গভীরতা মাপার। ১৬৬৮ সালে প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিমের দ্বীপপুঞ্জে কলোনি স্থাপন করল স্পেনীয়রা। কেবল শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেই ক্ষান্ত হলো না, স্পেনের রাজা চতুর্থ ফিলিপের বিধবা স্ত্রী রানি ‘মারিয়ানা অব অস্ট্রিয়া’র নাম ধার নিয়ে দ্বীপের নামকরণও তাঁরা করল ‘মারিয়ানা আইল্যান্ড‘। তবে ঔপনিবেশিক শাসকরা নিশ্চয়ই কল্পনাও করতে পারেননি মারিয়ানা আইল্যান্ডের দ্বীপগুলোর পূর্বপাশের জায়গাটিই পৃথিবীর গভীরতম স্থান। সুগভীর খাদটির অবস্থান প্রশান্ত মহাসাগরের ঠিক পশ্চিমে। দীর্ঘ গবেষণার পর আধুনিক বিজ্ঞানীরা জেনেছেন_প্রাকৃতিক নানা বিপর্যয়ে সমুদ্রের তলদেশে শত শত বছরে সংগঠিত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে তৈরি হয়েছে মারিয়ানা প্লেট। দ্বীপগুলোর অবস্থান এসব প্লেটের ওপরেই। আর দ্বীপের খুব কাছাকাছি হওয়ায় সবচেয়ে গভীর খাদ মারিয়ানা ট্রেঞ্চের নামও স্বাভাবিকভাবেই হয়ে গেছে রানি মারিয়ানার নামেই।  ৩২। মায়ান সভ্যতার অজানা ইতিহাস  খ্রিস্টপূর্ব ২৬০০ বছর আগে গড়ে উঠেছিলো মায়ান সভ্যতা। মায়ান সভ্যতার কথা শুনলে ভেবেই পাওয়া যায় না যে, সেই চার হাজার বছর আগে কীভাবে তারা এতো উন্নত হয়েছিলো? যখন পৃথিবীর মানুষ বাড়িঘরই ঠিকঠাক বানাতে শেখেনি, কেবল আগুন জ্বালিয়ে খাবার সেদ্ধ করা শিখেছিলো, সেই সময় তারা কীভাবে পাথর দিয়ে তৈরি করেছিলো বিশাল বিশাল সব ঘরবাড়ি। মায়ানরা যে জ্যোতির্বিদ্যায় পারদর্শী ছিলো তার অন্যতম উদাহরণ হলো তাদের তৈরি ক্যালেন্ডার। তাদের ৩ টি ক্যালেন্ডার ছিলো। তার মধ্যে একটি ছিলো `হাব` যেখানে বছরকে আধুনিক ক্যালেন্ডারের মতোই ৩৬৫ দিনে ভাগ করা হয়েছিলো। তাদের দীর্ঘতম ক্যালেন্ডারটি ছিলো ২৮ লাখ ৮০ হাজার দিনের। তাদের সে হিসেব অনুযায়ী ক্যালেন্ডারটি শেষ হয় ২০১২ সালে। তারা এ দিনটিকে পৃথিবী ধ্বংসের ভবিষ্যদ্বাণী হিসেবে নির্ধারণ করেছিলেন। তবে তাদের সে ভবিষ্যদ্বাণী ফলেনি। মায়ানরা স্টিম বাথ নিতে পছন্দ করতো। তারা মনে করতো, গোসলের সময় ধোঁয়ার সঙ্গে তাদের সব পাপ উড়ে যায়। ১৬৯৭ সালে মায়ান সাম্রাজ্য স্প্যানিসদের হাতে চলে গেলেও মায়ানরা এখনো বিভিন্ন অঞ্চলে টিকে আছে। মায়ান সাম্রাজ্য বিপন্ন হওয়ার কারণ এখনো এক রহস্যই রয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, খরা, দুর্ভিক্ষ, অধিক জনসংখ্যা এর কারণ হতে পারে। মায়ান সংস্কৃতি, এমনকি ভাষা এখনো মেক্সিকোর অনেক এলাকায় এবং গুয়েতেমালায় প্রচলিত আছে। পরিসংখ্যান বলে, এখনো ৭ বিলিয়ন মায়ান আছে, যারা ইউকাটান উপদ্বীপে বসবাস করছে।  ৩৩। পিরামিড রহস্য  মিসরের সবচেয়ে বড় পিরামিডের উচ্চতা ৪৮০ ফুট ও প্রস্থ ৭৫৬ ফুট। কীভাবে এত বড় বড় বেলে পাথর উত্তোলন করে ওই বিশাল আয়তনের পিরামিড তৈরি করা হয়েছিল তার সঠিক মত পাওয়া যায় না। তবে ধারণা করা হয়-ফারাও রাজাদের হাজার হাজার যুদ্ধ বন্দি চার পাশের বেলে মাটি দিয়ে উঁচু করেছিল। পরে বড় বড় পাথর খ-গুলো উপরে উঠিয়ে পিরামিড তৈরি করেছিল। শেষে পিরামিডের চারপাশ থেকে ওই বালি মাটি কেটে সরিয়ে ফেলা হয়েছিল। আর এভাবেই ওই পিরামিডগুলো তৈরি হয়েছিল বলে সর্বাপেক্ষা গ্রহণযোগ্য মতবাদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে ওই সব রহস্যময় পিরামিড় ও মমি নিয়ে সবচেয়ে বেশি সময় গবেষণা করেছেন জার্মানি প্রত্নতত্ত্ববিদ এডিস ভনভনির নাম উল্লেখ্যযোগ্য। তিনি সারাবিশ্বের অনেক পিরামিড নিয়েই খনন কাজ ও গবেষণা করেছেন। ফলে অনেক রহস্য, নতুন নতুন তথ্য আবিষ্কার করেছেন। আর পিরামিড মূলত প্রাচীন মানুষের সুরক্ষিত করব। তবে পিরামিড ও মমি শুধু মিসর বা ঈজিপ্টেই পাওয়া যায়নি। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তেও পাওয়া গেছে। বহু মমি এমন সুরক্ষিত ও সযত্নে রাখা হয়ে ছিল যে, দেখে মনে হয় আজো তারা জীবিত। যেন সেই ইতিহাস আজো ঐতিহাসিক কথা বলে। এরে মধ্যে সবচেয়ে রহস্যময় মমি পাওয়া গেছে দক্ষিণ আমেরিকার পেরু আঞ্চলে। যেগুলো তৈরি করেছিল প্রাচীন ইনকা সভ্যতার মানুষ। ইনকারা এই মমিগুলো হিমায়িত করে রাখত। যাতে তারা পরকালে ওই দেহ থেকেই আবার জীবিত হয়ে উঠতে পারে। তাদের দেহ অক্ষত থাকে দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকার দেশ গুয়েতেমালা এবং মেক্সিকোর ইউকাটানের জঙ্গলে পাওয়া গেছে আরেক বিশাল পিরামিডের নগরী। যার সাথে মিসরীয় সভ্যতা ও পিরামিড নগরীর হুবহু মিল রয়েছে। মেক্সিকোর রাজধানী মেক্সিকো সিটি থেকে ৬০ মাইল বা প্রায় ১০০ কি.মি দূরে অবস্থিত চেলুলার মালভূমি। আর এখানেই পিরামিড নগরীর ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। যা আয়তনে মিসরের গিযা নগরীর পিরামিডের চেয়েও আনেক বড়। তবে সবচেয়ে বড় আশ্চর্যের বিষয় হলো ওইখানকার প্রতিটি পিরামিড গ্রহ-নক্ষত্রের সঙ্গে মিল রেখে তৈরি করা হয়েছে। সেখান থেকে পাওয়া গেছে নিখুঁত মায়া পঞ্জিকা বা বছর হিসাব করার ক্যালেন্ডার। সেই পঞ্জিকা অনুসারেই ওই পিরামিডগুলো তৈরি করা হয়েছে। আপনী যদি মিসরে যান। তাহলে অবাক হয়ে বিস্ময়ের সঙ্গে ভাববেন। কীভাবে প্রায় একজন মানুষের সমান বর্গাকৃতির সিমেন্টর মতো তৈরি খ-গুলো এত উপরে তুলে ওই পিরামিডগুলো তৈরি করা হয়েছে? কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে? প্রযুক্তির নাম উল্লেখ করা হয়েছে সহজ বালি প্রযুক্তি। তবে সবচেয়ে বেশি গবেষণা চলছে মমি নিয়ে। আর এ গবেষণার ফলে নানান তথ্য আবিষ্কার হয়েছে। তবে জার্মানির প্রত্নতত্ত্ব বিজ্ঞানী এডিস ভনভনির ক্যান শ্রেষ্ঠত্ব আছে। তিনি এই পিরামিডের রহস্য আবিষ্কারের জন্য সারা বিশ্বের বিভিন্ন পিরামিডের স্থান ভ্রমণ করেছেন। ইনকা সভ্যতার অট্টালিকা ও বিশাল বিশাল পিরামিডগুলোর প্রাচীর নির্মাণ করতে ব্যবহার হয়েছিল প্রায় ১০০ টন ওজনের বেলে পাথরে খ-। সেগুলো নিখুঁত জ্যামিতিক মাপে তৈরি। ১৯৫৩ সালে ককেশাশের উত্তর শাকারায় প্রাচীন সমাধি ক্ষেত্রে এক বিরাট করব স্থান আবিষ্কার হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এটা প্রথম রাজবংশ কোনো ফারাওদের কবর হতে পারে। প্রধান কবর ছাড়া আরো ৭২টি কবর সারিবদ্ধভাবে সাজানো রয়েছে। ১৯৫৪ সালে সেগুলো খনন কাজ করা সময় ওই খানেই আরো একটি কবর আবিষ্কার হয়। কবরটি আগে কেউ দেখেনি। তার মধ্যে সোনা-দানা মূল্যবান জিনিস সবই রাখা ছিল। ডক্টর গানিদ নামের এক অধ্যাপক কবরে রাখা ওই কফিন বক্সটি বহু কষ্ট করে খুললেন। কিন্তু কি আশ্চর্য সেই সমাধিটির কফিন বক্সটি ছিল ফাঁকা। কোনো মমি তার মধ্যেই পাওয়া যায়নি। রাশিয়ান বিজ্ঞানী রোবেঙ্কো কুরগান একটি পিরামিড আবিষ্কার করেন চীনের উত্তরে চেঙ্গিস খানের দেশ মঙ্গোলিয়ার সীমান্তে। ওই কবরের সব কয়টি প্রকোষ্ঠ বরফ দিয়ে আটকানো। ভেতরে সব জিনিস হিমায়িত করে রাখা প্রধান কবরে রয়েছে ১টি পুরুষ ও ১টি নারীর মমি। দৈনন্দিন জীবন যাপনের সব উপকরণই রয়েছে ওই কবরের বিভিন্ন প্রকোষ্ঠে। চীনের সিচুয়ান প্রদেশে অবস্থিত রয়েছে ৪৫ ফুট লম্বা ৩১ ফুট উঁচু ৩৯ ফুট চওড়া একটি পিরামিড। আলপিছ নামক স্থানে পাওয়া গেছে ১টা হিমবাহু কবর। সাইবেরিয়ার জমে থাকা তুষারের নিচে পাওয়া গেছে ১টা হিমবাহু কবর। সাইবেরিয়াতে পাওয়া গেছে তুষারের মধ্যে কবর বা মমি জেরিকোতে রয়েছে পিরামিডের আদলে নির্মাণ করা ১০,০০০ বছর আগেকার কবর বা মমি। চীনের গোবি মরুভূমিতে পাওয়া গেছে অত্যধিক গরমে গলে যাওয়া কবর বা লাশ। যা প্রায় ১২০০০ বছর আগের। নমুনা দেখে বুঝা যাচ্ছে এই কবরে ছিল ২টি ধনী লোকের লাশ। আফ্রিকার নরিয়া লাপাতা মরুভূমি অঞ্চলে আবিষ্কার করা হয়েছে-বেশ কয়েকটি পিরামিড। যা মিসরের পিরামিডের আদলে তৈরি করা। মধ্য আমেরিকাতে লাখ লাখ পিরামিডের সন্ধান পাওয়া গেছে। আর শুধু মেক্সিকোতে পাওয়া গেছে ১ লাখ পিরামিড। যার মধ্যে অনেক পিরামিড আছে, যা এখনো কেউ ধরেই দেখেনি। যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণের দেশ মেক্সিকোর চেলুলার মালভূমিতে যে বিশাল পিরামিড রয়েছে এগুলোই বিশ্বে সংখ্যাধিক পিরামিড। যা মিসর সর্বাপেক্ষা বড় থিউপসের পিরামিডের দ্বিগুণ। ওই পিরামিডের মধ্য থেকেই ১৯৫২ সালের ১৫ জুন, একটি মমিসহ সোনা-দানা বিষয় সম্পত্তি সবই আবিষ্কৃত হয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো কেন এই পিরামিডগুলো তৈরি করা হতো? কেন মৃত মানব দেহকে মামি করে পিরামিডের মধ্যে রাখা হতো? এটা কি মুসলমানদের মতো পরকাল বা আখিরাতের ওপর বিশ্বাস করে? নাকি অন্য কোনো রহস্য রয়েছে। অতি হিমায়িত করে কোষগুলোকে দীর্ঘদিন বাঁচিয়ে রাখার চিন্তা ভাবনা, এই সে দিন মানুষের মাথায় এলো। অধ্যাপক এটিনজার, যে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন ভবিষ্যতে মানুষের মৃতদেহকে নির্দয় ও অমানবিকভাবে পুড়িয়ে ফেলা হবে না। কবরে পচিয়েও ফেলা হবে না। রেখে দেয়া হবে হিমায়িত করে। তার পর চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে একদিন সেই মৃতদেহকে জীবিত করে তোলা হবে। তাহলে খ্রিস্টপূর্ব ৬০০০ বছর আগেকার লোক কি জানতো এই প্রক্রিয়া? যা আজ ও আবিষ্কার হয়নি। মমি রহস্যের পেছনে এমন একটা চিন্তা ধারা থাকলে থাকতেও পারে। হয়ত তখনকার লোক জানতে পেরেছিল যে শরীরকে হিমায়িত করে রাখা যায়। তারা এও জানতো যে সুদূর ভবিষতের মানুষ একদিন এই মৃতদেহকে জীবিত করে তুলতে পাবে।  ৩৪। রহস্যপূর্ণ সানসিংতুন  "সানসিংতুন" এর নাম আগে "সানসিং গ্রাম" ছিল। কেউ ভাবতে পারেন নি যে, ইয়ে নামে একজন কৃষক জমি চাষ করার সময় একটি বিস্ময়কর আবিস্কার করবেন। তারপর একটানা কয়েক দশকের গবেষণার পর প্রমাণিত হয়েছে , পাঁচ থেকে তিন হাজার বছর আগে এখানে প্রাচীন শু রাষ্ট্রের রাজধানী ছিল। সুউজ্জল এই সভ্যতা এখানে ২০০০ বছর স্থায়ী ছিল। সানসিংতুন ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কারের ফলে শু রাষ্ট্রের ইতিহাস আরো ২০০০ বছর এগিয়েছে। এ আবিষ্কার চীনের সভ্যতার ইতিহাসকে আরো সুসম্পূর্ণ করেছে। সানসিংতুন সভ্যতা আর ছুয়াংচিয়াং নদীর সভ্যতা ও হুয়াংহো নদীর সভ্যতার মতো সবই চীনের সভ্যতার মুল সানসিং গ্রাম চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশের সিছুয়ান প্রদেশে অবস্থিত। রাজধানী চেনতুং থেকে গাড়িতে যেতে প্রায় এক ঘন্টা লাগে। ৭৫ বছর আগেকার বিস্ময়কর আবিষ্কার এই গ্রামের শান্তভাব ভেঙে দিয়েছে। প্রায় দশ বছর আগে এখানে সানসিংতুন নামে একটি জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয়।সানসিংতুন জাদুঘরের কর্মী ছিউ শুয়েন ছিং জানিয়েছেন, উত্তর অক্ষাংশের ৩০ ডিগ্রিতে অবস্থিত এই সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কারের গুরুত্বপূর্ণ তাৎপর্য আছে। তিনি বলেছেন, "এই অক্ষাংশে আরো রয়েছে ছুমোলোংমা পর্বত, মায়া সভ্যতা, বারমুদা ত্রিকোণ । এগুলোর অভিন্ন বৈশিষ্ট্য হচ্ছে রহস্য। সানসিংতুন হচ্ছে এখন পর্যন্ত দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আবিষ্কৃত পুরাকীর্তির মধ্যে সংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে বেশি, আওতায় সবচেয়ে বড়, স্থায়ী সময় সবচেয়ে দীর্ঘ এবং সবচেয়ে সাংস্কৃতিক সম্পদ সমৃদ্ধ একটি প্রাচীন নগর।"  ৩৫। UFO (Unidentified Flying Object) রহস্য  ফ্লাইং সসার (Flying Saucer) দেখতে চাকতির মতো, এক ধরণের রহস্যময় ধাতব আকাশযান। তবে ফাইং সসার বলতে কেউ ভিনগ্রহী আকাশযানকে বোঝান। ফ্লাইং সসারই বলুন আর গুপ্তচর বিমান, অশনাক্ত বিমানই বলুন- তা সবই UFO (Unidentified Flying Object)-এর অন্তর্গত। সেই খ্রীষ্টিয় বর্ষ (A.D) শুরুর আগ থেকেই ফ্লাইং সসার মানুষকে আকৃষ্ট করে চলেছে। মানুষ হতবুদ্ধি হয়েছে, উত্তেজিত হয়েছে, খুঁজে চলেছে সেই আকাশযানের উৎসকে।খ্রীষ্টপূর্ব ১৫ শতকে মিশরের ফারাও ছিলেন তুতেম খানম। তার সময় জনতা আকাশে দেখেছিল বিচিত্র ধরণের আগুনের গোলা। সে সময় সেনাবাহিনী খুঁজেছিল গোলার উৎসকে। হঠাৎ সেই গোলা অদৃশ্য হয়ে যায়। ষোড়শ শতকে কি কোন আকাশযান ছিলো ? না।১৭৫৬ সালে সুইডেনের লোকেরাও দেখেছিলো এ ধরণের অদ্ভূত রহস্যময় বস্তু। ইউরোপ বিশ্বের একটি অতি জনপ্রিয় ইউফো দেখার জায়গা।  ৩৬। Crop Circle  Crop Circle গুলো তৈরী করতে মানুষের প্রচুর সময় লাগবে, অন্তত এক রাতের মধ্যে নয়। তবে Crop Circle কিছু মানুষ তৈরি করেছে বলে জানা যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা Crop Circle তৈরী করার সময় অনেক ইউফো এবং আলোক বিন্দু দেখেছেন। সবচেয়ে লৌহমর্ষক ঘটনা ঘটে, ১৯৯৪ সালে। ঐ বছর কিছু লোক স্টোনহেঞ্জ ভ্রমণ করতে আকাশে ওঠেন। ৪৫ মিনিট পর আবার স্টোনহেঞ্জ দেখতে এসে ১০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটা জটিল Crop Circle দেখতে পান। এতো জটিল Crop Circle মানুষ ৪৫ মিনিটে তৈরি করতে পারে না। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক্সের প্লেন ক্যামেরাসহ অজানা আলোকে তাড়া করে, তাদের ক্যামেরায় স্পষ্ট দেখা গেলো, অজানা আলো যে ক্ষেতের উপর দিয়ে যাচ্ছে, শস্য কাত হয়ে যাচ্ছে, Crop Circle তৈরি হচ্ছে। অজানা আলো অদৃশ্য হয়ে যায়। এগুলোও ইউফো বটে। মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক বন্ধ হয়ে যায় Crop Circle এর মাধ্যমে।২০০২ সালে ইংল্যান্ডের এক শস্যবৃত্তে এক এলিয়ানের মুখচ্ছবি এবং তার হাতে ধরে রাখা একটি গোলক দেখা গিয়েছিলো। এছাড়াও হাজারো ধরণের শস্য গোলক প্রতি বছরই আবিষ্কৃত হচ্ছে। গবেষণাগারে ঐ নুয়ে পড়া শস্যগুলো পর্যবেক্ষণের পর জানা গেল -প্রচুর পরিমাণ মাইক্রোওয়েভ মিথস্ক্রিয়ার ফলে ওগুলোর এ অবস্থা হয়েছে।১৯৮৫ সালে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনার উপর দিয়ে উড়ে যায় একটি অদ্ভূত পিরিচ আকৃতির আকাশযান। একে নামানোর জন্য প্রেরিত বেতারবার্তা ফিরে আসে। তারপর একে নামাতে আকাশে উড়ে যায় ভয়ংকর বিমান ‘ফ্যান্টম’। এই বিমান দিয়েই ১৯৬৭ সালে ইসরায়েল অনায়াসে ৬ দিনের যুদ্ধে জয়লাভ করে। এ বিমানের রয়েছে মিসাইল ও পারমানবিক বোমা বহনের ক্ষমতা; কিন্তু বোমা মারার বোতাম টিপে দেখা গেল তা বিকল হয়ে গেছে। ঐ নভোযান চলে যাওয়ার পর ২টি বিমান সচল হয়। ইরান দাবি করে, তার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে পশ্চিমারা এই আকাশযান পাঠিয়েছে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অস্বীকার করে জানায় অন্য বিমানের সুইচ বিকল করার যন্ত্র তাদের কাছে নেই এবং বিমানটিও তাদের না।  ৩৭। ফ্লাইং সসার  ফ্লাইং সসার এর গতিপ্রকৃতি থেকে বুঝা যায়, এসব যান অন্য গ্রহ হতে আগত। ওরা পৃথিবীবাসীর সাথে যোগাযোগ করতে ও অবস্থা নিরিক্ষণ করতে আসে। সম্ভবত ওরা প্রযুক্তির ক্ষেত্রে পৃথিবীবাসীর থেকে অনেক বেশী উন্নত। ধারনা করা হয়, ওরা পৃথিবীবাসীর সাথে যোগাযোগ করতে আসে কিন্তু তাদের সাথে আমাদের প্রকৃতি ও প্রযুক্তিগত ব্যবধানের কারনে তাদের প্রেরিত বার্তা আমরা ধারন সক্ষম হই না!  ৩৮। ডেড সি বা মৃত সাগর  ডেড সি বা মৃত সাগর কে লবনের সমুদ্রও বলা হয় যেটি ইজরাইল এবং জর্ডান এর মাঝামাঝি অবস্থিত। ডেড সি সমুদ্র সমতল থেকে প্রায় ১৩০০ ফুট নিচে অবস্থিত। ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৬ সালের মধ্যে ডেড সি নিয়ে প্রায় ৯০০ টি নথি আবিষ্কার করা হয়েছে। খ্রিস্টপূর্ব ১০০ বছর পূর্বে এই ডেড সি আবিষ্কার করা হয়। ধারনা করা হয় সমুদ্রেরপনিতে অধিক লবনাক্ততার কারনে প্রচন্ড সূর্যের তাপের ফলে ওই সমুদ্রের পানির উচ্চতা কমতে কমতে এক সময় ১০০ ফুট পর্যন্ত নিচে নেমে যায়। অনেকের মতে এই ডেড সি এর খুব কাছাকাছি প্রায় ১ বিলিয়ন মুল্যের স্বর্ন রুপা থাকতে পারে। উপরে বালির আস্তর থাকায় এটিকে ডেড সি বা মৃত সাগর বলা হয়।  ৩৯। নাজকা সভ্যতার রহস্যময় ভূ-চিত্র  নাজকা লাইন হলো পেরুর দক্ষিণাঞ্চলের প্যাম্পা কলোরাডো বা লাল সমতলভূমি নামে পরিচিত এলাকার মাটিতে আঁকা কিছু জীব-জন্তু এবং জ্যামিতিক রেখার সমাহার যাদের ইংরেজীতে geoglyph বলা হয়ে থাকে। ১৯২০ এর দশকের শেষভাগে পেরুর রাজধানী লিমা এবং এর দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর আরেকিপার মধ্যে বানিজ্যিক ভাবে বিমান চলাচল শুরু হলে ন্যাসকা লাইনগুলি প্রথম ব্যাপকহারে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষন করতে সক্ষম হয়। সেই সাথে আর্কিওলজিস্ট, এন্হ্রোপোলজিস্ট সহ প্রাচীণ সভ্যতা সম্পর্কে আগ্রহী সকল মানুষকে এক বিশাল ধাঁধার মধ্যে ফেলে দেয়। ছবিগুলো আন্দিজ পর্বত এবং প্রশান্ত মহাসাগর থেকে ৩৭ মাইল দূরে সমান্তারালভাবে প্রায় ১৫ মাইল দীর্ঘ ব্যাপী বিস্তৃত। এই লাইনগুলোকে কখনও ইনকাদের রাস্তা, কখনও চাষাবাদের পরিকল্পনা, আবার কখনও পুরনোদিনের 'হট এয়ার' বেলুন থেকে উপভোগ করার জন্য আঁকা ছবি হিসাবে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন এগুলি হচ্ছে নাজকাদের মহাকাশীয় ক্যালেন্ডার। এদের মধ্যে সবচাইতে উল্লেখযোগ্য ব্যাখ্যাটি হচ্ছে এরিক ভন দানিকেনের ভিনগ্রহবাসীদের বিমান অবতারনার জন্য বানানো এয়ারস্ট্রীপের ব্যাখ্যাটা ১৯৯৭ সালে পেরু এবং জার্মান গবেষকদলের সমন্ময়ে প্যালপা শহরের কাছে নাজকা-প্যালপা নামে একটি গবেষণা প্রকল্প শুরু করা হয়। এই গবেষকদল নিয়মতান্ত্রিকভাবে একাধিক বিষয়ভিত্তিক গবেষনা শুরু করেন, যেমন ঐ অঞ্চলের মানুষের জীবন-যাপন পদ্ধতি, কেনইবা তারা হারিয়ে গেল, এই লাইনগুলোর উদ্দেশ্যই বা কি ছিলো। এই গবেষকদলের মতে নাজকা সভ্যতার শুরু এবং শেষ হয়েছে "পানির" সাথে সাথে। পেরুর উপকূলীয় দক্ষিনাঞ্চল এবং চিলির উত্তরাঞ্চল হলো পৃথিবীর অন্যতম শুষ্ক অঞ্চল। আন্দিজ পর্বত থেকে পূর্ব দিকে দশটি নদী নেমে এসেছে যেগুলো বছরের একটা নির্দিষ্ট সময় শুকনো থাকে। এই নদীগুলো দ্বারা গঠিত একটি সুরক্ষিত অববাহিকাতেই ন্যাসকা সভ্যতা বিকশিত হয়েছিলো। বসতির স্হাপনার জন্য এখানকার পরিবেশ ছিলো খুবই উপযুক্ত এবং সেই সাথে ছিলো ঝুঁকিপূর্ন। নাজকার আঞ্চলিক আবহাওয়া খুবই নাটকীয় ভাবে ওঠানামা করে। যখন দক্ষিণ আমেরিকার মধ্যাঞ্চল থেকে "বলিভিয়ান হাই" নামে পরিচিত উচ্চচাপের বায়ুমন্ডল উত্তর দিকে সরে আসে তখন আন্দিজের পশ্চিম ঢালে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। আর যখন সেটা দক্ষিণদিকে দিকে সরে যায় তখন বৃষ্টিপাত কমে যায় ফলে নাজকা অঞ্চলের নদীগুলো শুকিয়ে যায়। ঝুঁকিপূর্ন এই পরিবেশ সত্বেও নাজকা সভ্যতা প্রায় ৮০০ বছর ধরে বিকশিত হয়েছিলো।  ৪০। অজানা নভোচারী  ১৯৬৪ সালের ১৩ই মে জিম টেমপ্লেটন নামের একজন অগ্নি নিবারক কর্মী তার পাঁচ(৫) বছরের মেয়ের কয়েকটি ছবি তোলে। তার একটি ছবিতে একজন রহস্যময় নভোচারীকে দেখা যায়। কিন্তু জিমের মতে সেখানো সেদিন কেউ ছিলো না। কাউকে তিনি আসতে বা যেতে দেখেন নি। রহস্যময় ঐ লোকটি মহাকাশচারীদের মত পোষাক পরে ছিলো। আরো মজার ব্যাপার হলো তিনি বেশ কয়েকটি ছবি তুলেছিলেন কিন্তু নভোচারীকে শুধু একটি ছবিতেই দেখা যায়। এই ছবিটি যে ইডিট করা হয়নি সে বিষয়ে সাক্ষ্য দেয় বিখ্যাত কোডাক কম্পানী। 

Post a Comment

0 Comments